কবিতা : রাজীব পাল



মৃত্যু রঙের হাওয়া


নদীর কাছে এসে বসে পড়ে
লক্ষ কোটি বয়সের একটা পৃথিবী
তার বার্ধক্যজনিত অবসরে
পাখিরা এসে গান গাইছে

রক্তে ঘামে মাখামাখি বিষ থেকে
নিজেকে ধুয়ে যাচ্ছে দিগন্ত নামের যুবক
অসংখ্য ত্রিভুজ ভেঙে সমুদ্রে জন্ম নিচ্ছে
নতুন নতুন ধারণার যুবতী স্বপ্ন, ঢেউ

পায়ের ছাপ মুছে মুছে অক্ষত হয়ে ওঠা 
পথে পথে শূন্যতা টাঙানো ফেস্টুন
ফড়িঙের ডানায় সময় খুব ধীরে ধীরে কাঁপে,
অতিস্নিগ্ধ বনজ্যোৎস্নায় ভেসে যাচ্ছে
সংশয় জর্জরিত গ্রাম শহর, সমস্ত ভয়ের সাঁকো

মানুষের নিঃশ্বাসে জমেছিল দুর্গন্ধ, আত্মঘাতী বিষ
মৃত্যু রঙের হাওয়া থেকে আজ
ধৈর্যের স্বচ্ছতা নিয়ে অনড় কাচের দরজা
পাহারাদারের মতো ঘিরে রেখেছে
পৃথক রেখেছে আমাদের




তোর দিকে


উঠে যেতে পারে
মদ ছেড়ে 
মাংস ছেড়ে
সম্পর্ক ছেড়ে
                    তোর দিকে

উঠে যেতে পারে
রোদ নিভিয়ে
রাস্তা নিভিয়ে
মুখ নিভিয়ে
                    তোর দিকে

প্রতিটা ভোরে পোড়া গন্ধ মাখা কাগজ
ঝাঁপিয়ে এসে পড়ছে চৌকাঠে

তোকে লুকিয়ে রাখবো কোন দিকে, মা?




সংসার


চড়ুই দম্পতির খড়কুটোর সংসার
চোখ রাখি

সমসাময়িক সমস্ত কিছুতেই ঘেন্না
মাখামাখি

উঠোনের রোদে দড়ি ধরে ঝুলছে
শাড়ি সায়া

দৃশ্যে মগ্ন হলেই কান ধরে টানে --
মিথ, মায়া




কুড়িয়ে পেলাম


কড়া নাড়া নেই 
উঠোন জুড়ে গোপনে ঘাসের চাষ

ঘরের স্বপ্ন এঁকেছিলো চোখে
গুহার অভ্যাস

পিঁপড়ের জীবন কুড়িয়ে পেলাম একটি 

গর্তে
দু-একটি চিনির দানা, আবছা আলো
যৎকিঞ্চিৎ ঘাসের বীজ




যে সাঁতারে


প্রতিটা স্বপ্ন, ঘুম পেরোতেই চায়
কিন্তু সে গিয়ে দাঁড়াবে কোথায় বলো? 
সংক্রামিত অবিশ্বাসে কতটুকু আর ঘাস?

দরজা এখনও স্বাধীন নয় 
কোনো কোনো ঘরে খুব নিচু তার মাথা
মিহি স্বরে খোলে, বন্ধ হয়

যে সাঁতারে ডুবে যাওয়ার ভয় নেই
তেমন তরল গোড়ালি ছুঁয়ে যদি ডাকে
এবং তুমিও যদি তার সমার্থক হয়ে ওঠো, করুণার
আমি নেই, আমি নেই

Share this:

ABOUT THE AUTHOR

Hello We are OddThemes, Our name came from the fact that we are UNIQUE. We specialize in designing premium looking fully customizable highly responsive blogger templates. We at OddThemes do carry a philosophy that: Nothing Is Impossible

3 comments:

  1. ভালো লাগল কবিতাগুচ্ছ। আসলে রাজীবের কবিতা পড়তে হলে করোনা আতঙ্ক থাকলে হবেনা।খোলা মন নিয়ে কবিতার কাছে হাটুমুড়ে বসলে শব্দ গুলি ডানা মেলবে।ছোট ছোট দৃশ্যায়ন গুলি অনুভব করলে মজা পাওয়া যায়।আমার মাথাটা চঞ্চল হয়ে ওঠে।রাজীব যেন নিস্তরঙ্গ পুকুলর জলে সাঁতার কাটতে নয়, ডূবে থাকাতেই স্বচ্ছন্দ।অনেকটা গীতিময়তার আত্মকথন।বৃহৎ জগতের দৈনন্দিন যুদ্ধের ময়দান থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখেছেন। শেষ কথি বলার সময় এখন নয়,আমরা তার কবিতা পড়ছি এটাই চলূক।অভ অভিন কবিকে।

    ReplyDelete

সম্পাদক : শুভদীপ সেনশর্মা
সহ-সম্পাদক : মৌমিতা পাল