সারাদিন ফেসবুকে আমাকে দেখুন
এই বিজ্ঞাপন পর্ব মিটে গেলে পর
শুতে যাই । তারপর কবিতার দিকে
তাকিয়ে দেখি --কোথায় কবিতা ?
সে তো ছেড়ে চলে গেছে সেই কবে!
এখন আলো আছে , স্মারক আছে,
উৎসব-অনুষ্ঠান আছে , রেডিও-টিভি আছে ,
অনুরাগী-ভক্তবৃন্দ...
আমি কেবল নিজেকে দেখাই , নিজেকে সাজাই
আত্মতৃপ্তির হাসি হেসে লাইক গণনা করি
কে কমেন্ট করল না ঠিক মনে করে রাখি ।
বাইরে কেউ নেই--কিছু নেই
কাল রবিঠাকুরের জন্মদিনে সেজেগুজে লাইভে আসতে হবে।
আমার কথা তোমরা শুনবে...
আমার বিশ্বাস যত তলানিতে গিয়ে ঠেকছে
তত আমি বড় কবি ভাবছি নিজেকে
ক্রমাগত সাজিয়ে চলেছি
অথচ আমার মধ্যে দাহ নেই
আমি ফুরিয়ে যাচ্ছি দিন দিন।
অথচ ভিক্ষুক হতে পারছি না এই বুদ্ধপূর্ণিমার দিনে
আমার ভিতর কেবল আদিগন্ত খিদে
লোকে আমাকে দেখুক , লোকে আমাকে পড়ুক
আমি অন্যের লেখা পড়ি না । সে সময় নেই
আমি দেখছি অসংখ্য ভাইরাস এগিয়ে আসছে
অসংখ্য কাটা কালো শুকনো হাত...
আমি দরজা বন্ধ করে রেখেছি
কাটা হাত রোজ রাতে দরজায় টোকা দেয়
একদিন ওই হাতগুলো আমার দরজা ঠিক ভেঙে ফেলবে
তবু আমি নির্ভিক , নির্বিকার--
কবি হতে হবে...
আমার খুব যশ-খ্যাতি চাই...
জানালার ছবি
আজ দুপুরে একটা জানালার ছবি আঁকলাম।
জানালার একটা ছবি আঁকলাম আজ দুপুরে
অনেক দিন পর। আঁকতে আঁকতে
বিকেল ,বিশুদ্ধ কবিতার মত
ধূপ জ্বলে ওঠা বিকেল নেমে এলো।
আমি জানালার পর্দা আঁকিনি কোনো
আমি জানালার পাশে কাউকে দাঁড়াতে দেখিনি
কেবল দেখেছি জানালার রং করা শিকগুলোতে
কেমন জং ধরে আছে । ধুলো জমেছে কত...
আঁকা ফেলে আমি জানালার ধুলো
পরিষ্কার করতে বসে গেলাম...
শরীরে কেবল অপমানের দাগ লেগে আছে
শরীরে কোনো অহংকার নেই।
কেটে কেটে টুকরো করে
দিয়ে দিয়েছি তোমায়...
শরীরে কোনো কামনা নেই
উল্লাস নেই
দাহ নেই
খিদে নেই...
সব কিছুই দিয়েছি দেবী পূজার নৈবেদ্য-স্বরূপ
কী আছে তাহলে...
কী আছে তরল আঁধার -কাজলে ?
অপমান শীত্কারের মত শব্দ করে ওঠে
চাবুক চালায় পিঠে
উল্লুকের মত খিস্তি মারতে মারতে
পাগল হেঁটে যায়
একলা রাতে...
পেছনে কুকুর ,পেছনে পিশাচ ,পেছনে ভূতদল...
অরব অন্ধকারে খচ্চরের মত বেঁচে থাকা
যাকে আদর করে নাম দিয়েছি
'জীবন দেবতা'।
অপমান একদিন বৃদ্ধ হতে হতে , হতে হতে ,
নিজেকে অপমান করতে ভুলে যাবে...
আমি অপমানকে বুকসেল্ফে
বিবিধ পুরস্কার ও সম্মানের পাশে
সযত্নে সাজিয়ে রেখেছি...
শরীরে কেবল অপমানের দাগ লেগে আছে
বৃশ্চিক
আসলে সম্পর্ক যদি এলার্জির মতো হয়
আসলে সম্পর্ক যদি অন্ধকারকে ছুঁয়ে থাকে...
আমি ডানাহীন পতঙ্গ । লিবিডো তাড়িত
আমি সেই অহংকারী পুরুষ
তোমার দিকে ছুঁড়ে দিয়েছি ঘৃণা
জমানো শীৎকার
আমি সেই প্রেমিক , যার কোনো সামাজিক দায় নেই
আমি সেই লেখক , যাকে রাজনীতি ছোঁয়নি কখনো
সারাজীবন প্রেম লেখার পর বুঝেছি
প্রেম মানে আগুনের শিখা ,
শ্মশানের ধূলি... পবিত্র যাপন ।
আসলে লেখকের কোনো বন্ধু থাকে না
আসলে লেখকের লুকনো থাবা , ঈর্ষার দাঁত
যেমন , তারাশঙ্করবাবু বিভূতিভূষণকে বলেছিলেন ,
কী সব ভূত- প্রেত - জঙ্গল নিয়ে লেখো...
কে পড়বে এসব...
কে যে কাকে পড়ে... কেন পড়ে...
হে ঈশ্বর...
কে যে থেকে যাবে মহাকাল...
আমি বিষাদের আদিভূত কীট
দংশন করেছি তোমায়... এইটুকু জানি
লেখকের বন্ধু থাকে না কোথাও
সবটাই লুকনো থাবা, অমলিন
সবটাই প্রাচীন মুখোশ।
আমি সেই লেখক, যাকে প্রেম ছোঁয়নি কখনো।
ABOUT THE AUTHOR
Hello We are OddThemes, Our name came from the fact that we are UNIQUE. We specialize in designing premium looking fully customizable highly responsive blogger templates. We at OddThemes do carry a philosophy that: Nothing Is Impossible
0 comments:
Post a Comment
সম্পাদক : শুভদীপ সেনশর্মা
সহ-সম্পাদক : মৌমিতা পাল