চতুর্দশপদী কবিতাগুচ্ছ
১
মানুষ তাকিয়ে আছে তোচন ঘোষের মতো কবিতার দিকে-
মাংসের দোকান থেকে যেভাবে রক্তাক্ত পশু উস্কে দেয় লোভ;
ক্ষণিকের খিদে মেটে, ক্ষণিকের আলো পড়ে পেচ্ছাপের মতো...
মানুষ তাকিয়ে থাকে, জল খায়, নিজ নাম সারিবদ্ধ লিখে
আবার কখন খিদে পেয়ে যাবে এই ভেবে অপেক্ষায় থাকে।
মেটিং সিজন যেন, তবুও মানুষ জানে, তারা তো মানুষ;
সব ঋতুকাল তারা নিজেরাই টেনে টেনে বাড়ায়্ দু হাতে।
কারা লিখে গেছে এই মহাবিশ্বে মহাকাশে কে বা খোঁজ রাখে!
মাংসের দোকান থেকে যেভাবে রক্তাক্ত পশু উস্কে দেয় লোভ;
ক্ষণিকের খিদে মেটে, ক্ষণিকের আলো পড়ে পেচ্ছাপের মতো...
মানুষ তাকিয়ে থাকে, জল খায়, নিজ নাম সারিবদ্ধ লিখে
আবার কখন খিদে পেয়ে যাবে এই ভেবে অপেক্ষায় থাকে।
মেটিং সিজন যেন, তবুও মানুষ জানে, তারা তো মানুষ;
সব ঋতুকাল তারা নিজেরাই টেনে টেনে বাড়ায়্ দু হাতে।
কারা লিখে গেছে এই মহাবিশ্বে মহাকাশে কে বা খোঁজ রাখে!
তোচন ঘোষের যুগ, আলোয় গরম লাগে, অন্ধকার হোক।
এ আলোয় আলো নেই, কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প বুকের উপর।
ঘনিয়ে এসেছে ক্যাব, এনআরসি-র মায়াবিনী অরণ্যের লোক।
কে তোমার কথা শোনে? কে তোমার ভাষা হয়? কে তোমার স্বর?
এ আলোয় আলো নেই, কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প বুকের উপর।
ঘনিয়ে এসেছে ক্যাব, এনআরসি-র মায়াবিনী অরণ্যের লোক।
কে তোমার কথা শোনে? কে তোমার ভাষা হয়? কে তোমার স্বর?
কবিতা কোথাও নেই, রক্তমাখা কার্পেটের উপরে চাঁদোয়া-
এগিয়ে এসেছে ভূত, কবিতার, সরোজিনী ওইখানে শোয়া।
এগিয়ে এসেছে ভূত, কবিতার, সরোজিনী ওইখানে শোয়া।
২
‘ঘরে ফিরে যাও’, ব’লে চোখ টিপছে সাম্প্রতিক চাঁদ
মুখে কলঙ্কের দাগ, গলায় রুমাল, ঘনঘন
পিছু ফিরে তাকাচ্ছেন, এনকাউন্টারের ফাঁদ
পেরিয়ে এলেও যেন অন্ধকারে হয়েছে খনন
মাটিতে গোপন করা ইতিহাস বেরিয়ে পড়েছে।
হায় মৃদু জ্যোৎস্নাময়, চেয়ে দ্যাখো আলোর আঁধারে
অল্প দামে কিনে নিয়ে নিজেকে তাহার দামে বেচে
পাগল উন্মাদ হয়ে একা তার সাঁকোটিকে নাড়ে।
জীবন এমন। ভুয়ো মায়া দেখে মৌমাছির মতো
উড়ে চলে যাওয়া, যেন রানি মৌমাছির ডাক-
সাড়া না দিলেই সব শ্রমিকের জীবন নিহত।
চাঁদ যত অহংকারী, তত তার আসন্ন গ্রহণ
মধুসন্ধানের মতো কর্মব্যস্ত মৌমাছির ঝাঁক
নিজের মৃত্যুর পাশে নিংড়ে নেয় অমোঘ জীবন।
৩
আমাদের ভূতে পাওয়া হিজিবিজি শস্যক্ষেতে আরও
পঙ্গপাল উড়ে আসে; কেড়ে নিয়ে যায় সব ধান
রক্তদাগ পড়ে থাকে, মিশে যায় ভোরের আজান
বিষাদসিন্ধুর সঙ্গে, মাথা নীচু হয়ে যায় তারও
যে অস্ত্র ধরেছে হাতে, যে ঘৃণা করেছে তার ব্রত-
কী আচমকা ভূমিকম্প হয়ে গেল শহরে শহরে...
এমন বিদেশি ঝড় কখনও কি এসেছিল ঝড়ে?
মানুষ নিজের পায়ে কুড়ুল মেরেছে অবিরত
সাক্ষী তো সময়, তার কাছে বসে হেমলকের স্বাদ
করেছে যে জন, জানে, সে তো নয় সক্রেটিস কোনও
যা কিছু অসীম নয়, ভেঙে যায়, যা কিছু বানানো
ভাসে নোংরা জল যেন, কালভার্ট পেরোলেই খাদ।
আগুন লেগেছে তাই, তোমাকেই বলেছি বাঁচাও।
কত ভালোবাসো তুমি? কতদিন বেঁচে থাকতে চাও?
৪
গার্হস্থ্য রান্নার শব্দে মনে হয় বেঁচে থাকা ভালো।
খুন্তি নাড়ানোর শব্দ কী আদর স্বাদে গন্ধে মেখে
রেখেছে এমন ঘর; যেন ছুরি, তরুণ ধারালো
দেখে ভরসা জাগে তাই, বাকিটুকু বন্দী করে রেখে
আশা নিয়ে যতটুকু যাওয়া যায়, যেতে ভালো লাগে।
ভালো লাগা ভগবান। ঈশ্বরদর্শন হয় তার।
জীবন অপেক্ষা করে কতদিন এমন চিরাগে
আসে যায় আয়ু, তার হিসেবের খাতা অন্ধকার।
গার্হস্থ্য জীবন মানে চড়ুইভাতির চেয়ে কিছু
বেশি নয়, পাত পেড়ে খাওয়াতেই আনন্দে বাজার
করে আসা যায়, যৌথ সব পাখিবংশ পিছু
এসেছে তখন, দূরে কেউ খায় টাকনায় আচার।
রান্নাঘর তীর্থক্ষেত্র। ঈশ্বর তো অনন্তপাচক।
রান্নায় লবণ চাই, চাই সুখ-দুঃখ আর শোক।
৫
মনের ভিতরে ফের কারা যেন ডেকে ওঠে আজ
চিনি না তাদের, তবু, কাগজপত্রের মধ্যে দিয়ে
তারা উঠে আসে। ঘর দিল সব জ্বালিয়ে পুড়িয়ে
তবু ভালো আমাদের নীলকণ্ঠ সুখের সমাজ।
কারা ডাকে? দূর থেকে? দেওয়ালের অপর পাড়ায়
তাদের কি বাড়ি ছিল? ফাঁকফোকড় দিয়ে কারা মুখ
বাড়িয়েছে? পোড়া মাঠে ফুটবল খেলেছে অসুখ
তাদের চিনি না, তবু তারা আসে, ডাক দিয়ে যায়।
বলেছি যাব না, তবু অন্ধকারে কড়া নাড়ে রোজ।
যেন বা জানান দেয়, তারা আছে, আছে নষ্ট ঘাস
কবরের গা ঘেঁষে যে প্লাস্টিকের নতুন আবাস
সেখানে কি থাকে তারা? করিনি কখনও তবু খোঁজ।
এত ডাকাডাকি কেন? এত কেন আড়ালে ঘোরালো
জীবন তাদের? তারা অন্ধকারে পেয়েছি কি আলো?
৬
না, আলো তোমার নয়, বন্ধুরাও হয়ে পড়ছে একা।
কে তোমার বন্ধু ছিল কবে ? কারা কাদের বান্ধব?
একা একা রাস্তা যায়, একা একা ভেসে যায় সব।
একাই তো ফুটে ওঠে ফুল, তাকে একাই তো দেখা।
ধ্যান একা হয়, লেখা একাই লিখেছে মন তার
যতই দুঃখের কাছে বলে ওঠে, অনেকে থাকুক।
অনেক, একার মধ্যে নিজেদের দুঃখ আর সুখ
বলেছে, যেন বা তারা ভুল করে পেতেছে সংসার।
জীবন দুঃখের দাস। দুঃখ কি হাঁটু মুড়ে বসে?
জীবন ঘুমিয়ে পড়লে দুঃখ কি হাত বোলায় চুলে?
জীবন বান্ধবহীন, জানে তবু তাকে বাঘে ছুঁলে
এক ফোঁটা চোখের জল মেঘ থেকে পড়ে যাবে খসে।
আর কিছু নেই তার। আর কোনও মাটি নেই রাখা।
কে রয়েছে পূর্ণ আজ? কে রয়েছে একজীবন ফাঁকা?
ABOUT THE AUTHOR
Hello We are OddThemes, Our name came from the fact that we are UNIQUE. We specialize in designing premium looking fully customizable highly responsive blogger templates. We at OddThemes do carry a philosophy that: Nothing Is Impossible
১, ২ আর ৬ বেশ ভাল লাগল
ReplyDeleteBaah
ReplyDeleteসময়ের কথা
ReplyDeleteপ্রত্যেকটি ভালো। ১ ভীষণ ভালো
ReplyDeleteসমসাময়িক লেখা
ReplyDelete২, ৩, ৪, ৬ ফাটাফাটি!.
ReplyDeleteসব কটি খুব ভালো।
ReplyDelete